বিস্ময়ে আমি প্রায়ই ছেলেটাকে জিজ্ঞেস করতাম, 'তোমাকেও কেউ ভালো না বেসে পারে?!'
সে হাসতো। ছেলেটা নিয়ম করে তার হৃদয়ভাঙ্গার গল্প শোনাতো আমায়।কী সুনিপুণ ভাবে জনৈক ভদ্রমহিলা তার প্রেমিক হৃদয়টিকে ভেঙ্গে চুরমার করে দিয়েছিলো।আমি তার সব কথাই ভারী মনোযোগ দিয়ে শুনতাম, খুব ভালোবাসতাম তো.. তাই বোধহয়। তার পুরনো দুঃখ, নতুন ব্যর্থতা, সমসাময়িক দোটানা এবং হঠাৎ হঠাৎ মাথাচাড়া দিয়ে ওঠা পাগলামি, প্রতিটা কথাই আমায় বাধ্য করতো নতুন করে তার প্রেমে পড়তে।
তবুও, সে ঘুরিয়ে-ফিরিয়ে আমায় একটি নারীর কথা বলতো।একটি নারী, যে নারী আমি নই, যে নারীকে সে বরং ভালোবেসেছে, ভালোবেসে নিঃস্ব হয়ে গেছে, যে নারীকে নিয়ে সে জীবন কাটাতে চেয়েছিলো৷ এমন একটি নারী, যে আমি নই, যে কখনো আমি হবো না। আমি সব শুনতাম, কখনো অন্যমনস্ক হয়ে, কখনো খুব বিরক্ত হয়ে, কখনোবা ভীষণ কান্না চেপে রেখে। সে বলতো, আমি খুব সাবধানে চোখের জল মুছতাম, যাতে সে না বোঝে, যাতে সে না জানে। আর ভাবতাম, এমন পুরুষকে যে নারী ভালোবাসতে পারেনি, সে কি এই ধুলোভরা মর্ত্যের কেউ, নাকি দেবী?
তাকে আমি পাইনি, নতুন করে তা বলার অপেক্ষা বোধ করি রাখে না৷ তাকে আমি পাইনি তেমন করেই, যেমন করে সে পায়নি সেই নারীটিকে। ইদানীং, একটি চমৎকার পুরুষকে আমি তার গল্প খুব শোনাচ্ছি। কী করে সে আমায় ভালোবাসেনি, কী করে আমি তাকে ভালোবেসে নিঃস্ব হয়ে গেছি, কী করে তাকে একবার দেখার আশায় আমি তপস্যা করে গেছি রাতের পর রাত, কী করে...
কী আশ্চর্য আজকাল সেই চমৎকার পুরুষটিও নিখাঁদ বিস্ময়ে আমায় শুধোয়, 'তোমাকেও কেউ ভালো না বেসে পারে!?'
আমি মুচকি হাসি।
মন্তব্যসমূহ
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন